বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিশ্বাস এর মাধ্যমে। এই বিশ্বাসকে ধরে রাখাটাই, টিকিয়ে রাখে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে। একবার কারো আস্থা বা বিশ্বাস ভেঙে গেলে তার জন্য বন্ধুত্বের সম্পর্ক ফিরে পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, সেই সকল বিষয়গুলো সেগুলো খেয়াল রাখলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সব সময় সুন্দর থাকবে।
✽ কনসেপ্ট ১: যদি আপনি নিজেকে সম্মান করতে জানেন। তাহলে আপনি অবশ্যই অন্য কেউ সম্মান করতে পারবেন। অন্যকে সম্মান করলে তার কাছ থেকে আপনার নিজের প্রাপ্য সম্মানটুকু পেয়ে যাবেন। তাই আপনাকে আপনার নিজের বন্ধু হতে হবে। নিজের সম্পর্কে জানতে হবে। এক্ষেত্রে ভয় পাওয়া যাবে না, নিজেকে কঠোরভাবে বিচার করা যাবে না, নিজেকে কখনো দুর্বল ভাবা যাবে না। এভাবে নিজেকে সব ভাল কাজে উৎসাহিত করা। বিপদে সাহায্য করাই হলো নিজের ভালো বন্ধু হওয়া।
✽ কনসেপ্ট ২: যদি আপনাকে কেউ বিশ্বাস করে, তার কোন সিক্রেট আপনার সঙ্গে সেয়ার করে। অবশ্যই সেই সিক্রেট অন্য কারোর সাথে শেয়ার করা যাবেনা। অথবা এমন হতে পারে সেই সিক্রেট টা এমন কারোর সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছেন, যে অন্য কারোর কাছে শেয়ার করবে না। এভাবে নিজেকে নির্ভরযোগ্য হিসেবে তৈরি করতে হবে। তাহলে খুব ভালো বন্ধু হওয়া সম্ভব।
✽ কনসেপ্ট ৩: আমরা অনেকে বলতে পছন্দ করি, কিন্তু অন্যের কথা যে শুনতে হয় এ ব্যাপারটা এড়িয়ে যায়। তাই বেশি বলার চেয়ে শোনার অভ্যাস করে তুলতে হবে। এতে বন্ধুরা তাদের সুখ-দুঃখ আপনার সাথে শেয়ার করতে কমফোর্ট ফিল করবে। আপনাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেবে। কথায় আছে বোকারা বেশী কথা বলে, আর বুদ্ধিমানরা শোনে। কখনো এমন টাও হয় আপনার বন্ধুরা আপনাকে কোন গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে যাচ্ছে, আর আপনি সেটা না শুনে এরিয়ে যাচ্ছেন, এবং আপনার কথা বলেতেই থাকছেন। এর ফলে আপনি যেমন তার কথা কিছু বুঝতে পারছেন না। অপরদিকে সেও আপনার কথা ঠিক করে বুঝতে পারছে না। তাই এই বিষয় গুলোকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অনেক ভাল হবে।
✽ কনসেপ্ট ৪: যখন আপনার কোন বন্ধুর মন খারাপ থাকে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা উচিত কি হয়েছে! সে যদি বলতে না চায় তার মানে সে কষ্টটা হয়ত বলে বুঝাতে পারবে না বলে ভাবছে। অথবা ভাবছে বলেলে কি হবে। এসময় আপনার বন্ধু আপনাকে বলুক অথবা না বলুক আপনি তাকে সাপর্ট দেওয়ার চেষ্টা করুন। পসিটিভ্ কথা বার্তা বলার চেষ্টা করুন। বন্ধুকে ছোটখাট উপহার দেওয়া যেতে পারে নিজের সাধ্য মতো। বন্ধু অসুস্থ থাকলে তাকে দেখতে যাওয়া তাকে সাপোর্ট দেওয়া, তার জন্য প্রে করো। তাকে মজার কোন স্টোরি শোনানো এসব করা যেতে পারে। এসব বিষয় খেয়াল রাখলে আপনাদের বন্ধুত্ব আরো বেশি মজবুত হবে।
✽ কনসেপ্ট ৫: বন্ধুদের কে সব সময় এপিসোড করতে হবে। এতে করে আপনার বন্ধুও জীবনে উন্নতি করার সাহস পাবে। আপনার বন্ধু যদি আপনাকে কখনো কোন সাহায্য করে থাকেন। তবে অবশ্যই আপনি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। তাকে বোঝানোর চেষ্টা কোন সে কতটা হেল্প ফুল, তার বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনার বন্ধু বলতে পারবেনা আপনার ন্যূনতম কৃতজ্ঞতাবোধ নেই। দুজনে দুজনকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে বন্ধু সম্পর্ক অধিক শক্তিশালী রাখা সম্ভব।
✽ কনসেপ্ট ৬: সবারই তার বন্ধুদের সঙ্গে মজার সময় পার করা প্রয়োজন। একসাথে ঘুরতে যাওয়া, আড্ডা দেওয়া, অনুষ্ঠানে একসঙ্গে মজা করা। কোন বন্ধু অসুস্থ থাকলে বা দূরে থাকলে তার সাথে যোগাযোগ করা তার খোঁজ নেওয়া। সপ্তাহে একবার হলেও বন্ধুর খোঁজ নেওয়া বছরে একবার হলেও গেট টুগেদার করা এতে করে যত দূরেই থাকুক না কেন বন্ধুকে পাশে পাওয়া যাবে।
✽ কনসেপ্ট ৭: ভালো বন্ধু মানে সুখ দুঃখের সাথী এটা আমরা সবাই জানি। আচ্ছা বলুন তো আপনার কটি বন্ধু আছে। না ভেবে বলতে হবে না আমি বলছি। আমাদের জীবনে অনেক বন্ধু আছে কিন্তু ভালো বন্ধু আছে খুব কম। আর তার সংখ্যা ও খুব কম। তাই আমরা আমাদের ভালো বন্ধুর মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করবো এবং যে বন্ধু কে আমাদের পছন্দ না তাদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখবো নিজেদের। আর এটাই আমাদের কাছে হয়ত ঠিক হবে। খারাপ কে খারাপ বলে নিজে তার কাছে যদি খারাপ এর পরিচয় না দিয়ে নিজেকে তার থেকে সরিয়ে নেওয়া সেটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এতে করে খারাপ বন্ধুর সাথেও সম্পর্ক ভালো থাকবে। তাই আমরা সব সময় মনে করবো ভালো বন্ধু খারাপ বন্ধু বলে এই পৃথবীতে কিছু নেই। বন্ধু বন্ধুই।