2023 Yoga tips in bengali যোগাসন কি? যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করার নিয়ম

Home » Health Tips » 2023 Yoga tips in bengali যোগাসন কি? যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করার নিয়ম

Rules for yoga practice in Bengali – Jog bayam korar niyom:

 

yoga tips bengali যোগব্যায়াম অভ্যাস

 

What is yoga? যোগাসন কি?

যে নির্দিষ্ট দেহ ভঙ্গিমায় বা অবস্থায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সহ সারা শরীরকে স্থির রাখা যায় এবং কোনো রকম ভারী কষ্ট বা অসুবিধা সৃষ্টি হয় না সেই দেহ ভঙ্গিমা ও দেহাবস্থাকে যোগ ব্যায়াম বা যোগাসন বলা হয়।

Jog bayam in bengali: Here are the things that yoga practitioners will find here, Yoga Rules in Bengali language, jog bayam in bengali, sachitra bangla jog bayam, types of yoga in bengali, yoga bayam in bengali, history of yoga in bengali, importance of yoga in bengali, yoga in bengali,

যোগ ব্যায়াম কেনো করবেন?

Jog bayamer upokarita: শরীর রোগ মুক্ত ও কর্মক্ষম না হলে কোনো কাজই করা যায় না। সুতরাং শরীরকে সুস্থ ও কর্মে মনোযোগী করে তুলতে যোগ ব্যায়াম অভ্যাস অত্যন্ত জরুরী। প্রাচীন যুগে মনীষীরা ঈশ্বরের আরাধনা করতে গিয়ে বুঝেছিলেন শরীর ও মন সুস্থ না থাকলে, ভগবানের আরধাওনা করা কেনো, কোনো কাজই করা সম্ভব নয়। তাই তারা শরীর কে নিরোগ ও কর্মজোগী করে তুলতে নিয়মিত বিভিন্ন আসন ও মুদ্রার সাহায্য নিতেন।

স্বাস্থ্য রক্ষায় ও রোগারোগ্যে যোগ ব্যায়ামের অসীম কার্যকারিতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক মানুষ আজ সুস্থ সবল জীবন যাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই তথ্য আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ও পত্রিকায় দেখেছি। তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগ ব্যায়ামের বহুল প্রচার শুরু হয়েছে।

বর্তমানে যোগ ব্যায়ামের প্রচলন স্কুল কলেজের পাঠক্রমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাতে ছাত্র ছাত্রীদের স্বাস্থ্যরক্ষা ও দীর্ঘ জীবন লাভ এবং তাদের অধিক কর্মক্ষম ও সঠিক চরিত্র গঠন করায় সহায়তা করে।

খালি হাতে বা কোনো রকম ব্যায়ামাগার ছাড়াই কোয়েকটি ব্যায়াম অভ্যাস করলে একটি সুস্থ সবল সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব, এর জন্য বাড়তি কোনো অর্থব্যয় করতে হবেনা, শুধু অল্প কিছু সময় ও একাগ্র মনের প্রয়োজন।

যৌগিক ব্যায়াম: বৈদিক মনি ঋষিরা বিভিন্ন যোগের মধ্যে যে চারটি যোগ ব্যায়ামেকে বিশেষ ভাবে প্রাধান্য দিয়েছেন সেগুলো হলো ১. কর্মযোগ, ২. ভক্তিযোগ, ৩. জ্ঞানযোগ, ৪. রাজ যোগ।

যৌগিক ব্যায়াম দেহের ভিতরের বিভিন্ন গ্রন্থি সমূহ এবং স্নায়ুমন্ডল গুলিকে যে রকম পুষ্টি সাধন করতে ও সবল করতে সক্ষম অন্যকোনো ব্যায়াম সে ভাবে পারেনা।

কিছুদিন নিয়মিত যৌগিক ব্যায়াম অভ্যাস করলে মস্তিষ্কের ধারণ শক্তি বৃদ্ধি পায়, স্নায়ু সতেজ হয়, মাংসপেশী সবল হয়। ফলে বিভিন্ন কঠিন ও জটিল রোগ নিরাময় হয়। এছাড়া বিভিন্ন মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয় এবং মনে একাগ্রতা আনতে যোগ ব্যায়াম অদ্বিতীয়।

অনেক সময় দেখা যায় স্নায়ুতন্ত্র গুলো ঠিক মতো পরিচালিত না হলে পেশী সমূহ কে ঠিক পরিচালনা করা সম্ভব হয়না। ব্যায়াম শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো মানব দেহের স্নায়ুতন্ত্রকে অধিকতর নিশ্চয়তা, নিষ্ঠা, নিয়ম, শৃঙ্খলতার সহিত পরিচালনে অভ্যস্ত করে তোলা।

মানব দেহের মস্তিষ্ক হলো স্নায়ুমন্ডলীর কেন্দ্রস্থল। এই স্থানটি থেকে যে আদেশ প্রেরিত হয় তা মাংসপেশী ও বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গেকে পরিচালিত করে।

স্নায়ুগুলো মূল মেরুদন্ডে অবস্থিত, তাই মানুষের যৌবন শক্তি ও জীবনীশক্তি মেরুদন্ডের সবলতা ও নমনীয়তার উপর নির্ভরশীল। মেরুদন্ডে যদি সঠিক ভাবে রক্ত চলাচল না হয় তবে স্নায়ুগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে ও শরীরে জরাগ্রস্ত রোগ দেখা দেয়।

পৃথিবীর সব দেশের মানুষের একটাই লক্ষ্য হচ্ছে, কি উপায়ে মেরুদন্ডকে অধিক সবল ও মজবুত করতে করা যায় এবং মেরুদন্ডের মধ্য দিয়ে রক্তের চলাচল ঠিক রেখে বার্ধক্য ও জরা মতন ব্যাধিকে দূরে সরিয়ে রেখে অনেকদিন পর্যন্ত যৌবনকে ধরে রাখা যায়।

মেরুদন্ডকে সামনে পেছুনে ডাইনে ও বাঁয়ে বাঁকানো বা মচড়ানোর মাধ্যমে পুরো শরীরকে সুস্থ সবল রাখা সম্ভব, এ জন্য কয়েকটি ব্যায়াম বিশেষ ভাবে সাহায্য করে যেমন, অর্ধমৎস্যেন্দ্রাসন পূর্ণ্য মৎস্যেন্দ্রাসন, উষ্ট্রাসন, ভুজংগাসন, শলভাশন, ধনুরাশন, অর্ধচন্দ্রাসন, চক্রাসন প্রভৃতি।

এই আসন গুলির সাহায্যে মেরুদন্ডকে সামনে পেছনে বাঁকানোর সঙ্গে সঙ্গে যদি অর্ধমৎস্যেন্দ্রাসন নিয়মিত অভ্যাস করা যায় তবে স্পনডিলাইটিস রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকেনা।

যোগ ব্যায়াম অভ্যাসের নিয়ম:

  • যেকোনো বয়েসের ছেলেমেয়ে উভয়ই যোগ ব্যায়াম করতে পারে। ৫ বৎসরেরে ছেলে মেয়ে থেকে আরম্ভ করে ৮০-৯০ বছর পর্যন্ত স্ত্রী পুরুষ সকলেই যোগ ব্যা়ামের অভ্যাস করতে পারে। শুধু বয়স এবং স্ত্রী পুরুষ ভেদে ব্যায়ামের প্রকার ভেদ ও তার সময় মাত্রা আলাদা হয়।
  • পাতলা গদি বা নরম স্থানে যোগ ব্যায়ামের অভ্যাস করা শ্রেয়। খেয়াল রাখতে হবে কোনো ভাবে পরে গেলে বা যেকোনো ভাবে পিছলে গিয়ে শরীরের কোনো অংশে ব্যথা বা চোট সৃষ্টি নাকরে।।
  • ৮-১০ বৎসর ও ৫ বৎসরের বাচ্চা ছেলে মেয়েরা যেকোনো ব্যায়াম ১৫ সেকেন্ড করে ২ বার অভ্যাস করবে। পরে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ও সামর্থ্য অনুযায়ী ৩০ সেকেন্ড করে চারবার অভ্যাস করবে। প্রত্যেককে খেয়াল রাখতে হবে একদিন একসাথে ৭-৮ টির বেশি যোগ ব্যায়াম করার প্রয়োন হয়না।
  • কিশোর কিশোরীরা ১০ থেকে ১৩-১৪ বছরের ছেলে মেয়েরা প্রথম প্রথম প্রতি যোগ আসন ৩০ সেকেন্ড করে চারবার অভ্যাস করবে। কোনো রকম অসুবিধা বা কষ্ট অনুভব হলে নিজের সামর্থ মতো করবে। এভাবে ধীরে ধীরে নিজেরাই ব্যায়ামের সময় বাড়িয়ে নিতে সক্ষম হবে।
  • দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যায়াম করার ফলে একাসনে থাকার অভ্যাস রপ্ত করে নিলে সেই আসনটি পরপর চর বার অভ্যাস না করে ৪-৫ মিনিট আসনটি ধরে রাখতে পারে, এবং এভাবে আসন অভ্যাস করার পর ১-২ মিনিট সবাশন করবে। এরপর আবার অন্য আসন অভ্যাস করতে পারে। তবে যারা সব সময় গৃহকাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে (গৃহিদের ক্ষেত্রে) কোনো আসন ৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে করা ঠিক নয়।
  • প্রথম প্রথম যোগাসনে কিছু ভুল ভ্রান্তি হতে পারে, অনেকে মনে করেন এতে কোনো শারীরিক ক্ষতি হতে, এরকম ধারণা একেবারেই ভুল। এই রকম ভুল গুলোকে বার বার অভ্যাস করার মাধ্যমে সংশোধন করে নিতে হবে।

যোগ ব্যায়ামের সময়:

যোগাসন বা যোগ ব্যায়ামের নির্দিষ্ট কোনো সময় বাধ্যতামূলক নয়। নিজের সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো সময় ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারে। সকালে স্নানের আগে, সন্ধ্যায় বা রাত্রে খাবার কিছুক্ষণ আগে আসন অভ্যাস করতে পারে।

তবে সকালে ছাড়া অন্য কোনো সময় ব্যায়াম অভ্যাস করতে নেই, সকালে ছাড়া ক্ষুধার্ত অবস্থায় এবং একদম ভরা পেটে যোগ ব্যায়ামের অভ্যাস করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

অল্প কিছু খাবার আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর ও ভরা পেটে খাবার চর থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর যোগ ব্যায়াম করা যেতে পারে।

যোগাসন করার শেষে মিছরি বা চিনির সাথে আখের গুড় এবং পাতিলেবু ও সামান্য পরিমাণ লবণ মিশ্রিত করে সরবৎ করে খাওয়া স্বাস্থ্যের উন্নতিকর। যোগাসনের শেষে যদি বেশি ক্ষিধে লাগে তবে অল্প তরল জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে।

যোগব্যায়াম বা যোগাসনে শ্বাস প্রশ্বাস এর নিয়ম:

মনে রাখতে হবে যোগ ব্যায়াম বা আসন করার সময় যেনো শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক ভাবে নিতে ও ছাড়তে হবে। কোনো রকম ভাবে দম বন্ধ অবস্থায় আসন অভ্যাস করা উচিত নয়।

প্রতিটি আসন করার পর ২০-৩০ সেকেন্ড সবাশন অভ্যাস করা সাধারণ নীয়ম। শুধু মাত্র শীর্ষসন করার পর সবাসনের কোনো প্রয়োজন হয় না, কারণ শীর্ষসন করার পর মাথায় যে রক্ত সঞ্চার হয় হয়, শবাসন করলে সেই রক্ত নামতে বাঁধা পায় ফলে মাথা ভার অনুভব হয়।

• যারা বিভিন্ন রোগ নিরাময় করার জন্য ব্যায়াম করবে তারা যে কোনো যোগ ব্যায়াম করার আগে বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যেকোনো ব্যায়াম অভ্যাস করা শুরু করবে। এর ফলে রোগ আরোগ্যের জন্য দ্রুত ফল মিলবে।

Scroll to Top