হৃদয়ছোয়া লাভ স্টোরি ক্ষণিকের আলাপ – a heart touching love story in bangla

Home » Bangla Love Story » হৃদয়ছোয়া লাভ স্টোরি ক্ষণিকের আলাপ – a heart touching love story in bangla

কিছু কিছু  মুহূর্ত হয়তো এমন আছে যা ক্ষনিকের হলেও আমাদের মনের মনি কোঠায় রয়েযায় যুগ যুগ ধরে।  মুম্বাই এয়ারপর্ট প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা। কেউ যাচ্ছে নিজের কাছের মানুষ গুলোকে পেছনে ফেলে কেউবা আবার ফিরে আসছে সেই কাছের মানুষের কাছে।  আর এই আসা যাওয়ার মাঝে থেকে যায় কিছু ক্ষণিকের আলাপ।  কিছু ভালোলাগা আবার নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাওয়া।  এই চেনা অচেনা মুখগুলোর ভিড়ে ছিল দুটো পরিচিত নাম, আমির আর নীলাঞ্জনা একে অপরের খুব কাছের।  আবার একে অপরের খুব অচেনা।

Heart Touching Love Story In Bangla

মুম্বাইয়ে আজকের ওয়েদারটা এমনিতেই খারাপ ভীষণ বৃষ্টি নেমেছে এমনিতেই এই সময়ে মুম্বাইতে প্যাচপ্যাচে গরম থাকে।  কিন্তু আজকে আচমকাই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত ঘটলো।  ঠিক যেন আকাশের মেঘের উপর বহুদিনের জমে থাকা রাগ অভিমান বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়লো।  খারাপ ওয়েদারের জন্য সমস্ত ফ্লাইটস ক্যানসেল আর তাই আমার নীলাঞ্জনা আটকা পড়ল মুম্বাইয়ের এই বিমান বন্দরে।  এই মে মাসের মুম্বাইতে আচমকা বৃষ্টির মতন তাদেরও আচমকাই দেখা হয়ে যাওয়া। আর এই হটাৎ দেখাকেই ঘিরে আজকের গল্প।  হয়তো এটাকে গল্প বলা ভুল হবে বলা যেতে পারে হৃদয় ছোঁয়া কিছু সময়।


তাদের দুজনের কথোপকথন আরে আমির আরে নীলাঞ্জনা।  আরে কি সৌভাগ্য ৮ বছর পর দেখা।  আচ্ছা বাদ দে , আমির
নীলাঞ্জনাকে জিজ্ঞাসা করলোতুই এখানে কি করছিস। নীলাঞ্জনা দুবাই যাচ্ছিলাম কিন্তু সব ফ্লাইট ডিলিট স্টুপিড রেইন এর জন্য।  কিন্তু তুই এখানে কি করছিস আমির বললো আমি তোকে ফলো করছিলাম।  রিয়ালি! হ্যাঁ সত্যি। আর কেনো বলিস আমি ৪ ঘন্টা লেটে।  মনে তুই কাল রাত থেকে এয়ারপোর্টে।  তার পর নীলাঞ্জনা খাবার অর্ডার দিল। আমির পেমেন্ট করতে এগিয়ে গেল। নীলাঞ্জনা বাধা দিল।  আমির বললো না আমি পেমেন্ট করবো আর বললো তুই তার পর কথা শনাবি যে তোর জন্য ৪৭৫ টাকা খরচা করেছি তুই এক পয়সা খরচা করিস না।  শেষমেষ নীলাঞ্জনাই  পেমেন্ট করলো।  চল তাহলে একটা জায়গা দেখে বসি। খেতে খেতে অনেক গল্প হবে।  নীলাঞ্জনা বাধা দিল। আরে না না এর দরকার কি থাক বসবনা।  আমির হেসে বললো ভয় কি তোর হাসবেন্ড নিশ্চয়ই দুবাইতে বসে আমাদের উপর নজর রাখছে না।  সেটা নয় ওকে চল বসি।

আচ্ছা তুই দুবাইতে যাচ্ছিস তোরা এক সঙ্গে থাকিস না।  একচুয়ালি আমি কলকাতাতে থাকি বাবা মার সাথে তুই চলে যাওয়ার পর বাবা হার্ট বাইপাস।  তাই বাবার বিজনেস আছে তুই জানিস সেটা দেখা শোনা করতে হয়।  আমির বললো তুই দেখা শোনা করিস!! নীলাঞ্জনা বললো কেনো মেয়ে বলে ভাবছিস।  আমির বললো আরে না ঠিক তা না।  হ্যাঁ কি যেন বলছিলস দুবাই হ্যাঁ যাই প্রতি মাসে দুবার একবার।  আচ্ছা তোর হাসব্যান্ড কি করেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টে। হা হা চার্টার্ড অ্যাকাউন্টে আন বিলিভীবেল আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা।  নীলাঞ্জনা রায় চৌধুরী একজন বোরিং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ………….।  কি করবো বল একজন ইন্টারেস্টিং আর রোমান্টিক ফ্লিম মেকার ছিল কিন্তু সে বিয়ে করতে চাইলো না।

হুম সো তুই অনেক বদলে গেছে জানিস তো নীলাঞ্জনা।  চুলটা কেটে ফেললি কেন। কি রকম একটা দেখাচ্ছে আগের তোকে খুঁজে পাচ্ছিনা।  কেন বলতো সবাই কি আর সারা জীবন এক রকম থাকে।  এক সময় যে সারা দিনে দশ কাপ ক্যাপিচিনো নাহলে নাকি কাটতো না সে আজ ব্ল্যাক কফি খায়। এ আর এমন কি।  বাট আমি যে নিলাঞ্জনা কে চিনতাম সে চোখে চোখ রেখে কথা বলত।  আর তুই ঠিক ভাবে আমার দিকে তাকাতেও পারছিস না এখন।  ছারতো আমাকে নিয়ে অনেক হয়েছে। বল তুই এখন কি করছিস।  আমির বললো জানিসতো তুই ফ্লিম টাকে ছাড়তে পারিনি এখন একজন বিখ্যাত ডাইরেক্ট এর আসিস্টান।  কলকাতা থেকে চলে আসার পর দুবছর দিল্লিতে ছিলাম তার পর মুম্বাই তে। নীলাঞ্জনা জিজ্ঞাসা করলো তুই এখন খুশি তো? আমির হ্যাঁ আই অ্যাম রেয়ালি হ্যাপি।  ফ্লিম বানাচ্ছি সারা বিশবব্যাপী ঘুরে বেড়াচ্ছি আর কি চাই। হুম নীলাঞ্জনা মুখ নামিয়ে চোখ আলতো করে বললো হুম আর কি চায়।

আমির বললো আচ্ছা শোন তুই আর আমি মুম্বাইয়ে একা একটা এয়ারপর্ট এ বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে।  ফ্লাইটও লেটে সারাদিন কিছুই করার নেই।  চল কোথাও বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসি।  নীলাঞ্জনা আরে না তুই জানা প্লীজ।  আমির কিছুই শুনলো না সে বের হলো নীলাঞ্জনা কে নিয়ে এইরপর্ট থেকে। 

দুটো মানুষ যারা এক সময় নিজেদের লাইফ শেয়ার করত।  ব্রেক-আপের পরে আজ জাস্ট ফ্রেন্ডস।  কিন্তুু এই জাস্ট ফ্রেন্ডস থাকাটা কি সহজ। ফেলে আসা স্মৃতি মুহূর্তগুলোতে ফ্রেন্ডশিপের মুখোশ পরিয়ে? জীবনটাকে কি স্বাভাবিক করে রাখা যায়! দেখা যাক আমিরা আর নীলাঞ্জনা পারে কিনা।

এই নীলাঞ্জনা অটো নেই তোর অসুবিধা নেই তো।  বৃষ্টির মধ্যে অটো তে তোর সাথে নো ওয়ে।  আচ্ছা আমি প্রমিস করছি আমি আগের মত আচরণ করবো না।  নীলাঞ্জনা বলল কিন্তু এই হ্যান্ড ব্যাগটা।  নিয়ে চল কি আর এমন আছে এতে।  ওই তো তোর একটা ডায়েরি, পারফিউম, ব্রাশ আর ওই এক বোতল জল হবে।  তোর মনে আছে হ্যাঁ মনে আছে সব কিছু মনে আছে।  এই বলে আমির অটো কে ডাক দিল অটো অটো! দুজনে অটো তে বসলো। আবির জিজ্ঞাসা করলো নীলাঞ্জনা তুই ঠিক আছিস তো! আর শোন আগের বারের মতো কিছুই হবেনা তোকে কথা দিয়েছি।  রিলাক্স!

এর পর নীলাঞ্জনা জিজ্ঞাসা করলো তুই বিয়ে করিস নি কেনো। কি করব বল তোর মতো কাউকে পেলামই না।  তোরতো আমার মতো কাউকে দরকারই ছিল না।  ছার না এইসব বিয়ে টিয়ে আমার জন্য নয়।  একটু পরিচয় কিছুদিন সম্পর্ক এটাই ভালো কিন্তু বিয়ে হাস্যকর একটা ব্যাপার আমার কাছে।  তোর জন্য সব কিছুই কি এতো সাধারণ যখন ভালো লাগবে তুই কাছে টেনে নিবি।  মন ভরে গেলে একটা স্টুপিড এক্সকিউজ দিয়ে ফেলে চলে যাবি।  এমন কি তুই তার খোজ প্রযন্ত নিস না।  সে বেঁচে আছে না মরে গেল ইউ জাস্ট ডোন্ট কেয়ার।  তুই ভীষণ ডিফিকাল্ট একজন।

আবির হেসে বললো অভিযোগ করছিস।  আবির আমি আর তোর সাথে এক অটোতে যেতে পারবোনা নেমে যাব।  এই বলে সে অটো থামাতে বললো।  ভাইয়া অটো থামান আমি নেমে যাবো।  আবির আটকে যেতে বললো অটো থামতে দিলো না।  এর পরও নীলাঞ্জনা অটো থেকে নেমে যেতে চাইলো এবং বললো কিছুতেই তোর মত একজনের সাথে যাওয়া চলে না আমি কিছুতেই যাবনা।  ভাইয়া অটো থামান আমি নেমে যাবো।  আবির বললো নীলাঞ্জনা স্টপ স্টপ স্টপ রিলাক্স রিলাক্স রিলাক্স।

নীলাঞ্জনা ৮ বছর পর আমাদের দেখা হলো।  আর এই ১২ ঘন্টায় আমাদের কাছে আছে।  তার পর হোয়ত তোর সাথে আমার আর কোনো দিনই দেখা হবেনা।  আগে কি ঘটে গেছে সেটা ভেবে কি লাভ বল।  জাস্ট বোঝার চেষ্টা কর মুভ অন।  সেটাইতো করতে পারছিনা আমির।  একবারও ভেবে দেখেছিলিস তুই চলে গেলে আমার কি হবে।  আমির আমি তোকে সত্যিই ভালোবেসেছিলাম।  আর তুই একটা এস. এম. এস. ড্রপ করে চলে গেলি।  তুই জানিস তোকে কত ফোন করেছি এস. এম. এস. করেছি।  তুই জানিস তোর ফ্ল্যাটে গেছিলাম, সেখানে তলা ঝুলছিলো।  তোর বন্ধুরা বললো তুই কথাই কেউই জানে না।  আবির বললো ওই সময় আমি কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।  আমি তো ভেবেছিলাম তোর সাথে এক সঙ্গে থাকব, এক সঙ্গে বাঁচবো দুজন মিলে। কিন্ত আমাদের রেলিজিয়ন আলাদা, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা, আর কখনই কেউ আমাদের সম্পর্কটাকে মেনে নিত না।  তাছাড়া আমি আমার কেরিয়ার নিয়েও কি অবস্থায় ছিলাম তুই সেটা তো জানতিস। আর ওই সময় যদি আমি চলে না যেতাম নিজেকে সামলে নেওয়াটা হয়ত ডিফিকাল্ট হোয়ে পরত।

আর আমি জানতাম তুই অনেক স্ট্রং গার্ল।  নো নো আমির আমি এতটা স্ট্রং ছিলাম না।  তাছাড়া আমি তোকে বার বার বলেছিলাম আমার বাড়ি থেকে প্রেসার দিচ্ছে।  বিয়ে করার দরকার নেই জাস্ট কমিন্টমেন্ট ছেয়েছিলাম তোর কাছে।  তুই একবার আমার পেরেন্টসদের সাথে কথা বলতে পারতিশ। শুনে ভালো লাগছে তুই আমাকে এতটা হেট করিস।  এবার তো মুভ অন করতে পারবি।  জানিস জীবনে কখনো হতাশা অনুভব করিনি।  যা ছেয়েছি সেটাই পেয়েছি। শুধু জীবনে সবচেয়ে বেশী যেটা চেয়েছিলাম সেটা নিজের হতে হারিয়েছি।  তোকে ওই লাস্ট মেসেজ টা পাঠানোর পর আমিনা তিন দিন ঘুমাতে পারিনি।  শুধু চেয়েছিলম তুই আমাকে খুব হেট কর।  যাতে তোর কষ্টটা একটু কমে।  কিন্তুু কেন! কেন তুই আমাকে ছেড়ে চলে গেলি এভাবে।  তুই কি একদিনের জন্যও আমাকে ভালোবাসিসনি!

আমি কি এতটাই ভুল করেছিলাম।  নীলাঞ্জনা তুই নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করছিস। ইউ আর ওনলি দ্যা নীলাঞ্জনা।  তুই নিজেই তোর তুলনা তোর মত আর কেউ নেই।  কই তোকে হারিয়ে তো আমি দ্বিতীয় কোনো নীলাঞ্জনা কে আজও পাইনি।  কিন্তুু আমি কি করতাম বল ওই সময় আমার যে কিছু করার ছিল না।

আজ না হয় আমি একজন ডাইরেক্ট কিন্তুু তখন আমার কোনো পরিচয় ছিলনা।  কোনো কাজ নেই কোনো পরিচয় নেই। তোর বাবাকে গিয়ে আমি কি বলতাম! তার পর যখন কিছু হলাম ততদিনে তুই বিয়ে করে নিয়েছিস।  কিন্তুু বিশ্বাস কর আজও যখন একলা রাতে ঘুম আসেনা, চোখ বুঝে ঘুমাতে চেষ্টা করি মনে শুধু একরাশ হতাশা তোকে ঘিরে বিছানায় শুধু তোকে মনে পড়ে সেই প্রথম দেখার প্রথম মূহুর্ত টাকে।

বলেছিলাম না সত্যি টাকে ফ্রেন্ডশীপ এর মুখোশ পরিয়ে বেশিক্ষণ ঢেকে রাখা যায়না।  আমির আর নীলাঞ্জনার ও তাই হোয়েছে।  কিন্তুু ওরা একটা বিশেষ অপূর্চুনিটি পেয়েছে যা হয়ত সবাই পাইনা।  ১২ ঘন্টা এক সঙ্গে থাকার।  পুরনো স্মৃতি গুলোকে আবার রিলিভ করার।  দেখা যাক ওরা পারে কিনা পুরনো মান অভিমান ভুলে নতুন করে শুরু করতে।  এর পরে কি অদের ভালোবাসা সম্ভব। 


এবার তারা অটো থেকে নেমে রাস্তাই নামলো এক সাথে পায়ে পা মিলিয়ে চলতে শুরু করলো।  আমির বললো নীলাঞ্জনা অনেক দিন পর বল, আমরা একসাথে এভাবে হাঁটছি খোলা রাস্তায়।  ওপরে আকাশ আর তার নিচে আমরা দুজন।  এই নীলাঞ্জনা তোর মনে আছে তুই আর আমি একবার মানালী গিয়েছিলাম বেড়াতে।  তুই যেনো বাড়িতে কি বলে বেরিয়েছিলিস।  ওই তো বলেছিলাম নীলুর দিদির বিয়েতে যাচ্ছি।  আর বন্ধু-বান্ধবীদের বলেছিলাম দুর্গাপুর যাচ্ছি মাসি বাড়ি।  আর তোর কথা বলেছিলাম তুই বাবা মার সাথে দিল্লি যাচ্ছিস বেড়াতে। এই বলে দুজনে হেসে উঠল।  প্রাণ খোলা হাসি।  সেই মুহুর্ত গুলো খারাপ ছিলনা বল। নীলাঞ্জনা বললো হুম খারাপ ছিলনা।

জানিস রিসেন্টলি ফিল্মের একটা শুটিং এর জন্য মানালী গিয়েছিলাম সেই চেনা জায়গা তোর আর আমার কিন্তুু তুই ছিলিস না। তোকে খুব মিস করছিলাম জানিস।  আচ্ছা তুই বিয়ের পর হানিমুন এ কেরালা গিয়েছিলিস।  সেই ট্রি-হাউস এ বসে চাঁদের আলোয় রেড মাইন্ড খাওয়া।  তোর বিয়ের কথা শোনার পর থেকে এটাই তোকে জিজ্ঞাসা করবো ভাবছিলাম।  নারে ও নিউজিল্যান্ড নিয়ে গেছিলো ও খুব ইনজয় করেছিল।  আর তুই আবির জিজ্ঞাসা করলো। নীলাঞ্জনা বললো আমি সেই সব মূহুর্ত গুলো মনে করছিলাম তোকে ঘিরে যে গুলো আমার মনের গ্রহিনে জমা ছিল সেই কেরালা, রেড মাইন্ড, চাঁদের আলো।

পরক্ষনেই আবার সেই বৃষ্টি নামলো ঝিম ঝমিয়ে। নীলাঞ্জা ছুটে গেলে রাস্তা থেকে একটা ছাওয়া জাইগায়।  আবির ছুটলোনা দাড়িয়ে ডাকলো একি নীলাঞ্জনা তুই বৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করে নিতেচাইছিস কেনো।  একদিনতো বৃষ্টি তোর অনেক প্রিয় ছিল। কত ভিজেছি দুজনে বৃষ্টিতে।  আই আজও বৃষ্টি ভিজবো।  জানিস নীলাঞ্জনা বৃষ্টি হলেই তোকে খুব মনে পড়ে।  নীলাঞ্জনা তোর মনে আছে তুই বলেছিলিস বিয়ের পর তুই ব্লু শাড়ি আর আমি হোয়াইট শার্ট পড়ে বৃষ্টি ভিজবো।  দেখ আজ একটু তার উল্টো তুই বিয়ে করেছিস আমি বিয়ে করিনি।  তোর পরনে শাড়ি আছে বাট রংটা আলাদা।  কিন্তুু আমাদের সেই ভাবনার মুহূর্তটা দেখ আজ কেমন যেন মিলমিসে যাচ্ছে।  তার পর কখন যে তারা একে অপরের অনেক কাছে এসে গেছিলো কিছুই বোঝা যায়নি।

এই নীলাঞ্জনা এবার তো আমার হাতটা ছার তোর ফ্লাইট এনাউন্স হয়ে গেছে। নীলাঞ্জনা বললো হুম তো এবার।  তো আবার কি যাও মিস নীলাঞ্জনা আমৃত চ্যাটার্জী। নিজের জীবনে ফিরে যাও। আর ওই রেড বিন্দুটা লাগানো শুরু কর। ওটাতে তোকে দেখতে সুন্দর লাগে।  নীলাঞ্জনা জিজ্ঞাসা করলো আর তুই আমার আর কি আরতো দু-ঘণ্টার অপেক্ষা।  তার পর ফ্লাইট আর সেই নিজের জীবন কাজে ডুবে থাকা লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন। নীলাঞ্জনা সেই অদ্ভুত মন খারাপের হাসি হেসে বললো আবির ভালো থাকিস।  আর হ্যাঁ তুই কিন্তুু তোর হানিমুনে কেরালা যাস।  দ্যা ট্রি-হাউস, রেড মাইন্ড, চাঁদের আলো। নারে নীলাঞ্জনা ওটা শুধু তোর সাথেই হতে পারতো।  ভাবিসনা নীলাঞ্জনা তোর সাথে দেখা করার চেষ্টা করবনা। আর হয়তো কোনো দিন দেখা হয়েও যেতে পারে এভাবে হটাৎ।  নীলাঞ্জনা জিজ্ঞাসা করলো আর যদি এভাবে কোনো দিন দেখা না হয়। আবির বললো মুম্বাইয়ের এই এয়ারপোর্টতো রয়েছে।  আজকের এই ১২ ঘন্টা আমাদের সাথে সারা জিবন থাকবে। নীলাঞ্জনা ফ্লাইট এর দিকে এগিয়ে চললো।  আবির বললো নীলাঞ্জনা শোন তুই খুশি তো। নীলাঞ্জনা বললো জানিনারে আবির তবে তুই নিজেকে জিজ্ঞাসা করে দেখিস উত্তর মিলতে পারে…….. চলি রে আবির চলি অনেক ভালো থাকিস………….

খুব কাছের কারোর কাছ থেকে যখন দূরে যেতে হয় আমরা স্বাভাবিক ভাবে কি বলে থাকি ভালো থেকো, ফোন করো, আবার দেখা হবে। কিন্তুু আবির আর নীলাঞ্জনা জানে তাদের আর কোনোদিন দেখা হবেনা, এবার চিরকালের মতো আলাদা হয়ে পড়তে হবে।  কিন্তুু আলাদা হলেও ওদের এই বিশ্বাস টা চিরকালের মত থেকে যাবে, ওরা আলাদা হলেও ওরা ওদের নিজের নিজের জীবনে খুশি থাকবে ভাল থাকবে।  আট বছর ধরে জমে থাকা দুঃখ, মান অভিমান, কষ্ট সব আজ বৃষ্টির জলের সাথে ধুয়ে মুছে গেছে।  আজ ওরা শুধুই আবির আর নীলাঞ্জনা।  যারা কোনো সময়ে একে অপরের হয়তো খুব ঘনিষ্ট ছিল।  কিন্তুু আজ এদের চাহিদা, সম্পর্ক গন্তব্য, সবই আলাদা। আট বছর আগে থেমে যাওয়া দুটো জীবন আক্ষরিক অর্থে হয়তো নিজের নিজের জীবনে এবার এগিয়ে যেতে পারবে।


আপনাদের যদি এই ক্ষনিকের আলাপ  ভালোবাসার গল্প লেখাটি ভালো লেগে থাকে অন্যের সাথে ভাগ করে নিতে ভুলবেন না।  সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।  ধন্যবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top