হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসার কথা ও কাহিনী > Bangla new heart touching love story

Home » Bangla Love Story » হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসার কথা ও কাহিনী > Bangla new heart touching love story

কিছু ভালোবাসা থাকে হৃদয়ছোঁয়া কিছু ভালোবাসা থাকে বেদনার।  ভালোবাসা  মন ছুয়ে যায় ছুয়ে যায় হৃদয় আর সেই সেই ভালোবাসা যদি সত্যিই হৃদয়ছোঁয়া হয় তাহলে ভরে উঠে প্রেমিক প্রেমিকার মন।  আজ আমি একটি ভালোবাসার কথা শোনাবো আপনাদের যে গল্পের যোগাযোগের মাধ্যম হলো ফোন।  আর বাকি মুহূর্ত গুলো তারা অতিবাহিত করে মনে মনে কথা বলে।  যেটাকে টেলিপ্যাথি বলা যেতেই পারে।  চলুন তাহলে শুরু করি হৃদয়ছোয়া গল্প, কথা ও কাহিনী।

হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসার কথা ও কাহিনী - A New Heart Touching Love Story 2019 In Bangla
New Heart Touching Love Story 2019

ফোনের ঘন্টা বাজছে। আশিক ফোনের পাশেই বসে। সে ফোন রিসিভ করলো। টেলিফোনের ওপারে: একটা মেয়ের কণ্ঠোস্বর হ্যালো! সরি ভুল করে ফোন লেগে গেছে। আশিক ফোন রেখে দিল।  আর বই পড়তে মশগুল হয়ে পড়ল। এই বইটি সে অন্তত ২০ বার পড়ে ফেলেছে। এরকম না যে এই বইয়ে কিছু দরকারি কোনো বিষয় আছে।  এই বইটি অনেক দিন ধরে পড়েছিল কোনো এক কোণে।  আর বইয়ের লাস্ট পেজ টা পোকা নষ্ট করে দিয়েছে।  এক সপ্তাহ ধরে এই দফতরটি আশিকর, কারণ এই দফতরের মালিক আশিকর বন্ধু কিছু টাকার জন্য বাইরে গেছে।

আশিকের কাছে থাকার কোনো জাইগা ছিলনা।  তার মাথার উপরে কোনো ছাদ ছিলনা। এই জন্য ফুটপাত থেকে কিছু দিনের জন্য এই দফতরে এসেছে।  আর দফ্তরের এই শেষ বইটি সে কম করে ২০ বার পরে ফেলেছে।  দফতরে সে একেলা পরে থাকতো। চাকরি করতে তাকে ভালো লাগতো না। যদি সে চাইতো যে কোনো বড়ো ফ্লিম কোম্পানিতে সহজেই ফ্লিম ডাইরেক্টর হতে পারতো।  কিন্তুু সে গোলামি পছন্দ করেনা।  নিজের উপর ভরসা এবং শান্ত প্রকৃতির মানুষ আশিক  এই কারণেই হয়তো তার বন্ধুরা তার খরচের ব্যবস্থা করে দিত।  যদিও খরচের বিল খুব বেশি ছিল না।  সকালে এক কাপ চা দুপুরে কিছু না হলেও চলতো রাতে অল্প কিছু খাবার, আর সারাদিনে এক প্যাকেট সিগারেট, এতেই হয়ে যেত।  আশিকর কাছের কেউ এবং তার কোনো আত্মীয় ছিলনা।  তার চুপ থাকাতে ভালো লাগে। নিজের খেয়ালেই তার দিন কাটে। তার বন্ধুরা শুধু এটুকুই জানে কোনো একটা কারণে সে ছোটবেলাতেই ঘর ছেড়েছে।  তারপর তার বাকি জীবন মুম্বাই এর ফুটপাতে।  তার জীবনে শুধু একটা জিনিসেরই কম সেটি হলো ভালোবাসা।


আশিক: যদি কারোর ভালোবাসা পেতাম তাহলে জীবন বদলে ফেলতাম।
বন্ধুরা: তবু কাজ তো করতে হবে।
আশিক: কাজ! আমি যারা কাজ করে তাদের রল মডেল হয়ে যাবো।
বন্ধুরা: তবে শুরু করে দাও করো সাথে ভালোবাসা।
আশিক : না আমি এরকম ভালোবাসা চাইনা। যেটা ছেলেদের দিক থেকে প্রথম শুরু হবে।
দুপুরের খাবার সময় হয়ে গেল আশিক সামনে দেওয়ালে ঘড়ির দিকে তাকালো। এমন সময় ফোনের রিং টিউন বেজে উঠলো।
আশিক : হ্যালো ১৪৪৩২৫৭
ফোনের ওপারে  আশিক  ১৪৪৩২৫৭ !?
আশিক : হ্যাঁ বলছি
ফোনের ওপারে : আপনি কে 
আশিক: আমি  আশিক  বলছি, বলুন কি বলবেন
ফোনের ওপারে : ………………..
আশিক: কি হলো বলুন কি বলতে চান, চুপ করে আছেন কেন, কাকে চাই আপনার।
ফোনের ওপারে : মানে….. বলেছিলাম 
আশিক: হ্যাঁ বলুন !
ফোনের ওপারে  : আপনাকে চাই, আপনার কি কোন প্রবলেম আছে !
আশিক: জি না কোনো অসুবিধা হবে কেনো,
ফোনের ওপারে : আপনার নাম কি ?
আশিক: আশিক , আর বলুন আপনি আমার সাথে কি কথা বলতে চান।
ফোনের ওপারে: হ্যাঁ কথা বলতে তো চাই।
আশিক: তাহলে বলুন কি বলতে চান, কি হলো…..
ফোনের ওপারে : বুঝতে পারছিনা কি বলবো। আপনিই শুরু করুন কোনো কথা।
আশিক: বাহ! খুব সুন্দর তো, আচ্ছা তাই হোক , তাহলে বলি আমার নাম তো আমি প্রথমেই বলে দিয়েছি।
ফোনের ওপারে : হ্যাঁ
আশিক: এখন এই দপ্তরি আমার ঠিকানা, আগে আমার ঠিকানা ছিল কোনো ফুটপাত। এক সপ্তাহ হলো আমার এই নতুন ঠিকানা দফতর।
ফোনের ওপারে : ফুটপাতে আপনি ঘুমাতেন এর আগে ?
আশিক: হা হা হা …. আমি আর কোনো কিছু আপনাকে বলার আগে একটা কথা পরিষ্কার করে বলে নিতে চাই, সেটা হলো আমি কখনো মিথ্যা বলিনা। আমি ফুটপাতে অনেক দিন কাটিয়েছি। একটা যুগ বলতে পারেন। আর এই দফতর টি এক সপ্তাহ হলো আমার বর্তমান। এখানে খুব ফুর্তিতে কাটছে দিন গুলো।
ফোনের ওপর : মৃদু হাসির আওয়াজ হুম হুম হুম। আর জিজ্ঞাসা করলো ফুর্তি কেনো ?
আশিক : একটা বই পেয়েছি এখানে। যার লাস্ট পেজ কথাই যেনো হারিয়ে গেছে, কিন্তুু এটা ২০ বার পড়েছি। যেদিন ওই লাস্ট পেজটা বুঝে উঠতে পারবো সেদিন পরিষ্কার হবে যে এই বইয়ের নায়ক নায়িকার কি হয়েছিল!
ফোনের ওপারে : সেই মৃদু হাসি হুম হুম হুম আপনি বড় অদ্ভুত মানুষ।
আশিক : আমি অদ্ভুত কোনো হতে যাবো এটা আপনার খেয়াল আমাকে নিয়ে।
ফোনের ওপারে: আপনি কি করেন?
আশিক : কি করি আমি ! কই কিছুই না। একজন বেকার ছেলে কি করতে পারে, সারাদিন ঘুরে বেড়ানো নিজের মনে কথা বলা, প্রকৃতির সুন্দর্য দেখা। আর রাত্রি হলে ঘুমিয়ে পরা।
ফোনের ওপারে: আর এইরকম জীবন আপনার ভালো লাগে ?
আশিক: হুম দাড়ান একটু ভেবে নেই, কোনো দিন এটা নিয়েতো ভাবিনি। আজ আপনি জিজ্ঞাসা করলেন একটু ভাবতে হবে…….। এই জীবন আমাকে ভালো লাগে কি না লাগে।
ফোনের ওপারে: কি কিছু উত্তর মিললো !
আশিক: না কিছু উত্তর পেলামনা তো। মনে হচ্ছে এরকম জীবন ভালই লাগে জানেন, না হলে জীবন এতদিন কাটলো কি করে!
ফোনের ওপারে: হুম হুম হুম হুম………… সেই মৃদু হাসি একটু যেনো প্রকাশ পেলো বেশি করে।
আশিক : শুনুন একটা কথা বলবো!
ফোনের ওপারে: হ্যাঁ বলুন!
আশিক: আপনার হাঁসি ভারী সুন্দর।
ফোনের  ওপারে : ধন্যবাদ।
এর পর এই অজানা অচেনা সম্পর্কহীন পরিচয়হীন দুটি মানুষের কথা শেষ হয়ে গেলো।  আশিক  কিছুক্ষন ফোন হাতে করে দাড়িয়ে রইলো। তারপর নিজের মনে হাসলো এবং পকেটে ফোন রেখে দফতর বন্ধ করে চলে গেলো।
দ্বিতীয় দিন ঠিক সকাল সাড়ে আটায় যখন  আশিক  বিছানায় শুয়ে ঠিক সেই সময় ফোনের রিং টিউন বেজে উঠলো আবার। সে ঘুম ঘুম খেয়ালে ফোন রিসিভ করলো।
আশিক: হ্যালো ১৪৪৩২৫৭ কে বলছেন! ?
ফোনের ওপারে: শুভ সকাল  আশিক  সাহেব।
আশিক : ইয়েস শুভ সকাল। ও ওহ! আপনি।
ফোনের ওপারে : তো সাহেব আপনি এখনও শুয়ে আছেন!
আশিক : এখানে এসে অভ্যাস একটু পরিবর্তন হিয়েছে। ফুটপাতে গেলে আবার অসুবিধা আরম্ভ।
ফোনের ওপারে: কেনো! ???
আশিক : কেননা ওখানে সকাল পাঁচটা বাজার আগেযে উঠে পড়তে হয়। আচ্ছা একটা কথা বলুন কাল কেনো আপনি ফোন সারাদিনে কেন একবারও ফোন করেননি।
ফোনের ওপারে : কাল কেন আপনি আমার হাসির তারিফ করলেন।
আশিক : যে জিনিস এত সুন্দর তার তারিফ কি করা চলেনা?
ফোনের ওপারে : না একদম চলেনা…..
আশিক : এই দোষের দোষারোপ আপনি কিছুতেই আমাকে করতে পারেন না। আজ প্রযন্ত কোনো দোষারোপ আমার নিজের ওপর লাগতে দেইনি। আপনি হাসলে তার তারিফ আমি করবই।
ফোনের ওপারে : আমি ফোন অফ করে দেবো।
আশিক : ওকে করে দিন।
ফোনের ওপারে : আমি অভিমান করেছি তাই অফ করে দেবো আর আমার অভিমানের কোনো মূল্য নেই!
আশিক : আমি সবার আগে আমি আমাকে অভিমানী করতে চাই না যে! আর যদি আমি আপনার হাসির তারিফ না করি লোকে যে আমার পছন্দকে নিয়ে কথা বলতে থাকবে। আপনার হাসি যে আমার কাছে খুব সুন্দর।
ফোনের ওপারে: আচ্ছা তাহলে আপনার পছন্দই আপনার গর্ভ। তাহলে এটা বলুন এবং আর আমার খুব জানতেও ইচ্ছে আপনার সখ কি ? মানে আপনার প্রফেশন, ওয়ার্ক?
আশিক : কাজ কিছুই সেরকম জানিনা, শুধু ফটোগ্রাফির একটু আধটু সখ আছে।
ফোনের ওপারে : বাহ! এতো দারুণ একটা বিষয়।
আশিক : একটু হেসে বললো এটা খারাপ কি ভালো এটা নিয়ে কোনো দিন ভাবিনি।
ফোনের ওপারে : তাহলে তো আপনার কাছে যে ক্যামেরা আছে সেটা খুবই ভালো মানের।
আশিক : একটু হেসে বললো আমার কাছে কোনো ক্যামেরা নেই, বন্ধুর কাছ থেকে চয়ে সখ পূরণ করে নিই। তবে আমি যেদিন ইনকাম করে কিনবো কোনো একটা ক্যামেরা আমার পছন্দের আছে সেটা অবশ্যই কিনবো।
ফোনের ওপারে : কোন ক্যামেরা ?
আশিক : সেটি হলো রিফ্লেক্স ক্যামেরা। আমার অনেক পছন্দের একটি।
ফোনের ওপারে : আমি কিছু ভাবছিলাম!
আশিক : কি ?
ফোনের ওপারে : আপনি না আমার নাম জানতে ছেয়েছেন, না আমার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেছেন!
আশিক : আমি এটার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা তাই জানতে ইচ্ছে হয়নি।
ফোনের ওপারে : কেনো !
আশিক : নাম আপনার যাই হোক তা জেনে আমার কি হবে! আর আপনি এই পৃথিবীতেইতো থাকেন। আর আপনি আমার নাম্বার এ ফোন করেছেন আর পরেও করবেন আপনাকে হারিয়ে ফেলার কোনো ভয়েই নেই আমার। আপনি যদি মনে করেন আমাকে বলবেন তাহলে বলে দিন।
ফোনের ওপারে : না আমি বলবো না! আপনি অদ্ভুত মানুষ।
আশিক : জি হ্যাঁ এটা হয়তো ঠিকিই বলেছেন! আমি এরকমই…
ফোনের ওপারে : আপনি এরকমই করবেন তো !
আশিক : হ্যাঁ
ফোনের ওপারে : ঠিক আছে আমি রেখে দিলাম ফোন।
এর  আশিক  ও ফোন ডিসকানেক্ট করে দিল। আর মনে মনে অজানা ভালোলাগা হাসি হাসলো। আধ ঘন্টা পর  আশিক  যখন হাত মুখ ধুয়ে শার্ট পরে বাইরে যাবে ঠিক করলো ঠিক এই সময়েই ফোনের রিং বেজে উঠলো,  আশিক  ফোন রিসিভ করলো।
আশিক : হ্যালো ১৪৪৩২৫৭ !
ফোনের ওপারে : মিস্টার  আশিক  !?
আশিক : হ্যাঁ বলছি কি হলো আবার ফোন করলেন।
ফোনের ওপারে : ফোন করলাম কারণ আমার অভিমান কমে গেছে। নাস্তা করতে করতে মনে হলো আপনার সাথে অভিমান করে ভুল করেছি। আর হ্যাঁ আপনার নাস্তা হয়ে গেছে।
আশিক : জি না , বাইরে বের হচ্ছিলাম আপনার ফোন এলো কথা বলছি।
ফোনের ওপারে : ওহঃ সরি সরি! তো আপনি যান কেমন নাস্তা করে নিন।
আশিক : জি না ব্যাপার না আমার কোনো তারা নেই আপনি বলুন। আর আজকে আমার কাছে পয়সা ও তেমন নেই। নাস্তা নাও হতে পারে।
ফোনের ওপারে : আপনি এরকম কথা কেনো বলেন। আর মনে হয় আপনি এরকম কথা বলেন আপনার অনেক দুঃখ।
আশিক : জি না , আমার যদি কোনো দুঃখ থেকেও থাকে সেটা আমার পরিচিত অনেক।
ফোনের ওপারে : আচ্ছা আমি কিছু টাকা পাঠিয়ে দিতে পারি। আপনার মত থাকলে।
আশিক : হ্যাঁ পাঠিয়ে দিন। যারা আমাকে সবসময় টাকা পোয়সা দিয়ে সাহায্য করে তাদের সাথে আপনার নামটিও জুড়ে যাক।
ফোনের ওপারে : জি না আমি টাকা পইসা পাঠাবো না। আমি ফোন রাখছি।
আশিক : আপনি যেটা ঠিক বোঝেন।
আশিক ও ফোন রেখে দিল আর মনে মনে হাসল আর রুম থেকে বের হয়ে গেলো। রাত দশটার দিকে  আশিক  বারি ফিরলো। বিছানায় শুয়ে ভাবতে লাগলো যে ওই মেয়েটি কে যে এতো ফোন করে । গলার কন্ঠস্বরে এটা শুধু বোঝা যায় যে সে যুবতী, হাসিটা অনেক সুন্দর, কথাবার্তায় এটা পরিষ্কার যে সে পড়ালেখা শিক্ষিত ভদ্র বাড়ির। অনেক্ষন ধরে সে এসব ভাবতে থাকলো। এদিকে ঘড়িতে রাত্রি একটা বাজে ওদিকে ফোনের রিং বেজে উঠলো।
আশিক : হ্যালো
ফোনের ওপারে : মিস্টার  আশিক!
আশিক : জি হ্যাঁ , বলুন কি বলবেন।
ফোনের ওপারে : আমি বলতে চাইছি যে আমি সারা দিনে অনেক বার ফোন এ রিং করেছি কথায় ছিলেন আপনি।
আশিক : ফোন ফেলে রেখে বেড়িয়েছিলাম। বেকার তবুও কাজে বেড়িয়েছিলাম। বেকার মানুষদের বেশি কাজ থাকে এটা নিশ্চয় আপনার জানা আছে।
ফোনের ওপারে : কি কাজে বেরিয়েছিলাম?
আশিক : ওই তো এদিক সেদিক হাঁটা হাঁটি করা আর ঘোরাঘুরি।
ফোনের ওপারে : হা হা হা! কখন ফিরলেন। আর এখন কি করছেন ?
আশিক : শুয়েছিলাম বিছনায় আর এখন আপনারা কণ্ঠসরের শুনছি আর মনে মনে আপনার ছবি আঁকছি।
ফোনের ওপারে : পেরেছেন আঁকতে ?!
আশিক : জি না।
ফোনের ওপারে : আঁকার চেষ্টাও করবেন না কারণ আমি দেখতে কুৎসিত এবং খারাপ।
আশিক : ক্ষমা করবেন আমি দেখতে খারাপ পছন্দ করিনা এবং ঘ্রেনা করি।
ফোনের ওপারে : হা হা হা ! সত্যি নাকি… তাহলে নিন আমি খুব সুন্দরী। আমি আপনার হৃদয়ে ঘ্রেন্না সৃষ্টি করতে চাইনা। শুনুন আপনার জন্য একটা গান গাইছি মন ভালো রাখার জন্য আপনার ………………

এরপরেই ফোন রেখে দিল গোটা বাড়িতে এবং  আশিকর মনে, হৃদয়ে সেই গানের সুর প্লাবিত হতে লাগলো। সকালে সে তারাতারি ঘুম থেকে উঠলো এবং টেলিফোনের অপেক্ষা করতে থাকলো। প্রায় দেড় ঘন্টা ফোন নিয়ে বসে রইলো কিন্তুু রিং বাজলো না। যখন মনে অধৈর্য্য হয়ে উঠলো এক অজানা একরাশ মন খারাপ অনুভব করতে লাগলো, আশিক বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল আর সেই বইটি যেটা অন্তত কুরিবার পড়ে ছিল, সেই বই নিল এবং পাতা ওল্টাতে শুরু করলো। এভাবেই শুয়ে থেকে সন্ধ্যা হয় গেলো। প্রায় সন্ধ্যা সাতটায় ফোনের রিং বাজলো।

আশিক : কে বলছেনফোনের ওপারে : আমি!আশিক : সকাল থেকে কোথায় ছিলেন!ফোনের ওপারে : কেনো!আশিক : আপনি জানেন সকালে নাস্তা দুপুরের খাবার কিছুই হইনি আমার।

আশিক : দেখো এরকম চলবে না। ঠিক সময় এক টাইম এ ফোন আসা চায়। অপেক্ষা সহ্য করতে ভালো লাগেনা। আমার কষ্ট হয়।
ফোনের ওপারে : আচ্ছা জি কাল থেকে এরকম টি আর হবেনা। সকাল এবং সন্ধ্যা দু টাইম আপনার কাছে ফোন আসবে। এটা ঠিক আছে তো! আমি জানতামনা আপনি এতটা অদ্ভুত হৃদয়ের মানুষ।

আশিক : ক্ষমা করবেন। কি জানেন তো আমি অপেক্ষা একদম সহ্য করতে পারিনা। আর যে জিনিস আমার পছন্দ না সেটা যদি আমার সঙ্গে ঘটে, আমি নিজেকে শাস্তি দিতে শুরু করি।ফোনের ওপারে : কি করে শাস্তি দেন নিজেকে ?

আশিক : সকালে আপনার ফোন আসেনি চা পান করিনি। বাইরেও খেতে যাওয়া হয়নী। আজ কাছে টাকা ছিল যেতে পারতাম কিন্তু সারাদিন ঘড়ের মধ্যে একা করে নিজেকে শাস্তি দিয়েছি।

ফোনের ওপারে : ক্ষমা করে দিন প্লিজ। আমার বুঝতে ভুল হয়েছে।  আমি জেনে বুঝে ফোন করিনি। আগে থেকে আর এমনটা হবেনা।

আশিক : কেনো!

ফোনের ওপারে : এটা বোঝার জন্য যে আপনি আমার অপেক্ষা করেন কি না।আশিক : হা হা হা! আচ্ছা জি বেশ করেছেন। এখন ফোন ডিসকানেক্ট করুন। আমার ভীষণ ক্ষুদা লেগেছে কিছু খেতে যাবো এবার।

ফোনের ওপারে : কখন ফিরবেন!আশিক : আধা ঘন্টার মধ্যে।ফোনের ওপারে : আচ্ছা জি।

আশিক খেতে বের হিয়ে গেলো ফোন রেখে। আধা ঘন্টা পর ফোন এলো।  অনেক্ষন ধরে দুজনে কথা বলে কাটালো। এর পর আশিক কে সে গান শোনালো…………।  আশিক সেই গানের ধন্যবাদ জানালো।  এভাবেই সকাল সন্ধা ফোনে কথা হতে থাকলো দুজনের। এক মাস দুই মাস তাদের এভাবেই কাটলো।  তারা ঠিক করলো দেখা করবে দুজন দুজনার সাথে।  এ দেখা সে দেখা নই, এই দেখা হলো সেই দেখা যেখানে চোখের দৃষ্টির মিলনের সাথে দুটি মনের ও মিলন ঘটবে।
দেখা করার আর মাত্র দুইদিন বাকি ছিল আশিক এর ভীষণ জর এলো।  তার মনে ফোনের রিং আর মধুর কণ্ঠের আওয়াজ বাজতে থাকলো। সে বিছানা ছেড়ে ওঠার চেষ্টা করলো কিছুতেই টা সম্ভব হলো না।  তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলো। আর তখন সে ওই বইএর লাস্ট পেজ টা মনে পড়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো আসলে কি লেখা ছিল ওই বই এর শেষ পাতায়।
• প্রিয় পাঠক পাঠিকা আপনাদের আমার লেখাটি আপনাদের হৃদয়কে যদি এত টুকু স্পর্শ করে কমেন্ট ও আপনার প্রিয় মানুষের সাথে ভাগ করে নেবেন।

Comments are closed.

Scroll to Top